বার্মার শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক অত্যাচার, নির্যাতন, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, ঘরবাড়ি ও ফসল পোড়ানোর শিকার হয়ে প্রায় ৬ লক্ষ রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সরকার মানবিক কারণে এই সকল রোহিঙ্গাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসা দিয়ে তাদের সহযোগিতা করেছে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংগঠন তাদেরকে 00 8 সাহায্য প্রদানে এগিয়ে এসেছে।
অটোমান সুলতান মহামতি সুলায়মান একজন শ্রেষ্ঠ সাম্রাজ্য বিস্তারকারী শাসক ছিলেন। তাঁর সাম্রাজ্য কৃষ্ণসাগর হতে তিউনিসিয়া এবং ভিয়েনা হতে আরব সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। দুর্নীতির দায়ে তার জামাতাকেও তিনি শাস্তি দিতে দ্বিধাবোধ করেননি। এমনকি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে তিনি নিজ পুত্রকে ফাঁসি দেন। তিনি অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দিতেন।
শিল্প বিপ্লবের পর ইংল্যান্ড ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো অর্থনৈতিকভাবে অনেক সমৃদ্ধ দেশ। শিক্ষা- দীক্ষায়ও আজ তারা অনেক অগ্রগামী। এমন একটা সময় ছিল যখন তারা ধর্মগ্রন্থ ছাড়া অন্য কোনো গ্রন্থ সম্পর্কে আগ্রহ প্রকাশ করতো না। বর্তমানে সেখানে বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে সারাবিশ্ব হতে ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে মেধাবী শিক্ষার্থী, গবেষকরা এসে জ্ঞানচর্চা করেন।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এ মেলায় ক্রেতা, বিক্রেতা, দর্শনার্থী, শিল্পী, সাহিত্যিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত হন। উন্মুক্ত মঞ্চে প্রতিদিন আবৃত্তি, সঙ্গীত, প্রকাশনা উৎসব ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর সাহিত্যকর্মের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশ দক্ষিণ সুদান। স্বাধীনতা লাভের পর দেশের প্রতিটি নাগরিকের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন জরুরি হয়ে পড়ে। এ নিয়ে সরকার প্রধান রাষ্ট্রের অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে সংবিধান রচনা করেন। এর ফলে সকলের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
শাসন ক্ষমতা লাভের পর মি. রহিমকে অনেক সমস্যা ও বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়। তার সময় ভণ্ড ধর্ম প্রচারকদের উদ্ভব, কর বিরোধী আন্দোলন ও স্বধর্মত্যাগীদের বিদ্রোহ রাষ্ট্রে ধর্ম ব্যবস্থার ওপর আঘাত হানে। তিনি সাহস ও দৃঢ়তার সাথে এ জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলা করেন। বিশ্বস্ততার জন্য তাকে বিশেষ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে গণতন্ত্রের সূতিকাগার বলা হয়। আইনসভাটি দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট। উচ্চ কক্ষের নাম হাউজ অব কমন্স। মূলত হাউজ অব কমন্সে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ ঐক্যমতের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনার যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। অপরদিকে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে গঠিত হাউজ অব লর্ডসের সদস্যগণ দেশের সার্বিক বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে সুচিন্তিত মতামত দেন।
সুলতানী ও মুঘল আমলে ভারতে ফারসি ভাষায় সরকারি কার্যক্রম চলতো। কিন্তু পলাশী যুদ্ধের পর ইস্ট- ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। শাসন ক্ষেত্রে ব্রিটিশরা ইংরেজি ভাষার প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে অনুভব করে। এরই প্রেক্ষিতে তারা ভারতে ইংরেজি শিক্ষার স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। অফিস আদালতসহ সবখানে ইংরেজি ভাষা চালু করা হয়। অর্থনীতি, শিক্ষা, ব্যবসায় তারা ইংরেজি সংস্কৃতি চালু করে।
চেঙ্গিস খান শুধু তার নিজস্ব বীরত্বে বিশাল সাম্রাজ্যের অধিকারী হতে পারেননি। দক্ষ সেনাপতির রণনিপুণতাই তার সাম্রাজ্যের বিশাল বিস্তৃতির প্রধান কারণ ছিল। তাছাড়া সাম্রাজ্য বিস্তার করেই তিনি ক্ষান্ত হননি। তার বিশাল সাম্রাজ্যকে তিনি “উত্তরাঞ্চল' ও ‘দক্ষিণাঞ্চল' নামক দুটি প্রধান উইং-এ বিভক্ত করে সেখানে দুইজন দক্ষ প্রতিনিধি নিয়োগ করেছিলেন। তাঁরা দুইজনই পরস্পর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে রাজ্য বিস্তার করতেন। তবে এদের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিনিধি মেঙ্গু খান ছিলেন খুবই নৃশংস।
বাদশা নাসির উদ্দিন বিশাল সাম্রাজ্যের অধিপতি হওয়া সত্ত্বেও সহজ, সরল ও অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন। তার কোনো দাস-দাসী ছিল না। তিনি ব্যক্তিগত ও সাংসারিক প্রয়োজনে সরকারি কোষাগার থেকে কোনো অর্থ খরচ করতেন না। কুরআন শরীফ নকল ও টুপি সেলাই করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি খুলাফায়ে রাশেদীনের আদর্শ ও ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী ছিলেন। প্রশাসনিক কাজের চেয়ে তিনি ধর্মীয় কার্যাবলিকে অধিক গুরুত্ব দিতেন।
পবন চৌধুরি মরিচপাশা গ্রামের জমিদার পরিবারের সন্তান। তিনি উচ্চ শিক্ষিত ও পৈতৃকসূত্রে বিশাল সম্পদের অধিকারী। এলাকার মানুষের শিক্ষার উন্নতির জন্য তিনি একটি গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেছেন। দেশ-বিদেশের বহু গ্রন্থ সংগ্রহ করে তিনি এটিকে সমৃদ্ধ করে তুলেছেন। তার এই গ্রন্থাগারের সুনাম শুনে দূর-দূরান্ত থেকে বহু জ্ঞানপিপাসু মানুষ এখানে ছুটে আসেন। তিনি এই গ্রন্থাগার পরিচালনায় প্রচুর টাকা খরচ করেন।
আজমপুরের খান বংশের ব্যবসায়ী দাউদ খান তালুকদার বংশের হান্নান সাহেবের নিকট এক সংঘর্ষে পরাজিত হয়ে জমিদারি হারান। বিজয়ী হান্নান সাহেব খান বংশের লোকদের ওপর নির্মমভাবে অত্যাচার চালান। তার অত্যাচার থেকে কোনোক্রমে রেহাই পেয়ে খান বংশের সন্তান কবির মাহমুদ মাতুলালয়ে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে ভাগ্যান্বেষণে তিনি পার্শ্ববর্তী রাজনগরে স্বাধীন জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন।
“ক' রাজ্যের ধর্মীয় নেতা মি. এন্থনি যখন জনসম্মুখে আসেন তখন সবাই অবাক। তিনিও তো তাদের মতো একজন সাধারণ মানুষ অথচ একদল পুরোহিত বলে আসছিল যে তিনি মানুষ নন বরং দেবতা। পুরোহিতদের বলা এসব কাহিনী যখন তার গোচরে আসে তখন তিনি তাদের কঠোর শাস্তি দেন। অতঃপর জনগণকে সাথে নিয়েই তিনি ‘ক’ রাজ্য প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখেন।
অজয়নগর ও বিজয়নগর পাশাপাশি অবস্থিত দুটি গ্রাম। শাহাদৎ সাহেব অজয়নগর গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি, অন্যদিকে আমিন সাহেব বিজয়নগরের একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। দুইজনেরই শক্তিশালী লাঠিয়াল বাহিনী আছে, যারা ছোটখাট বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। কিছুদিন আগে শাহাদৎ সাহেবের এলাকা থেকে আমিন সাহেবের লোকজন শস্য ও গবাদি পশু জোর করে নিয়ে যায়। শাহাদৎ সাহেব আমিন সাহেবের কাছে এর বিচার চান। আমিন সাহেব তাতে কর্ণপাত করেননি। এতে শাহাদৎ সাহেব রাগান্বিত হয়ে আমিন সাহেবের এলাকায় হামলা চালায়। আমিন সাহেব তা প্রতিহত করতে গিয়ে পরাজিত হন এবং তিনি নিজেও প্রাণ হারান।
অনলাইন শপিং এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলছে মানুষের ব্যস্ততা ও কর্মপরিধি বাড়তে থাকায় তারা আজ বাজারে যাবার পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছে না। তাছাড়া প্রতিটি পণ্যের দাম নির্ধারিত থাকায়, সঠিক ওজন ও পণ্যের গুণগত মানের নিশ্চয়তা বিধান করায় এ শপিং ব্যবস্থার উপর ক্রেতাদের আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পাচ্ছে। পণ্যের সরবরাহ নির্বিঘ্ন, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, দ্রব্য সামগ্রীর বিপুল সমাহার ও বৈচিত্র্য থাকায় অনলাইন শপিং মানুষের সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় করছে।
উচ্চাভিলাষী জমিদার প্রবাল রায়ের অত্যাচার ও কঠোর কর আদায় নীতির কারণে সাধারণ প্রজাগণ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বন্ধ করে দেয়, কৃষক কৃষিকাজ ফেলে পালিয়ে যায়। বিদ্রোহ দমন করতে যেয়ে তার মৃত্যু হয়। গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের অনুরোধে চাচাত ভাই শ্যামল রায় নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে জমিদারির দায়িত্ব নেন। তিনি জমিদারের প্রতি প্রজাদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক জনকল্যাণকর কাজ করেন। তিনি সাধারণ প্রজার বকেয়া কর মাফ করে দেন। আবার ঋণ প্রদান করেন। তবে অধিক হারে ঋণ প্রদান ও বেহিসেবি দান খয়রাতের ফলে রাজকোষে প্রচণ্ড অর্থ ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে জমিদারির দূরবস্থার জন্য তাকে দায়ী করা হয়।
হায়দার গ্রুপের স্বত্বাধিকারী আলী হায়দার উত্তরাধিকারসূত্রে বিশাল ধন-সম্পদ ও ক্ষমতার অধিকারী হন। তিনি পিতার মত সৌখিন, রুচিশীল ও স্থাপত্যের প্রতি দুর্বল ছিলেন। তিনি বসবাসের জন্য একটি বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করেন। অফিসে বসার জন্য একটি মণিমুক্তা খচিত চেয়ার তৈরি করেন । তিনি তার স্ত্রীকে খুব ভালোবাসতেন। সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। শোকাহত আলী হায়দার তার প্রিয়তমা স্ত্রীর স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য অনেক টাকা খরচ করে একটি সমাধি সৌধ নির্মাণ করেন। বিশাল ধন-সম্পদের মালিক হয়েও সন্তানদের সংঘাতের কারণে তার শেষ জীবন সুখের হয়নি।
সুলতান সুলেমান সিংহাসনে আরোহণ করে রাজ্য শাসনে পুরাতন ধ্যান-ধারণার সংস্কার করেন। তিনি প্রশাসন, বিচার ও সৈন্য বাহিনীর জন্য আলাদা বিভাগ ও পদ সৃষ্টি করেন। তিনি প্রত্যেকের পদ মর্যাদা অনুযায়ী ক্ষমতা ও অবস্থান নির্ধারণ করে দেন। এতে উচ্চ রাজ কর্মকর্তাগণের মাঝে মর্যাদার বিরোধ নিরসন হয়। ফলে সাম্রাজ্য শাসনে শৃঙ্খলা ফিরে আসে। তবে তার এ ব্যবস্থা ত্রুটিমুক্ত ছিল না।
পবিত্র হজ পালনের জন্য জনাব হারুন সাহেব সৌদি আরব গমন করেন। একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হিসেবে সেদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুশাসন ও আচার-আচরণ তিনি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। দীর্ঘদিন সেদেশে অবস্থান করে তিনি নিজ দেশে ফিরে আসেন। স্বদেশে ফিরে এসে দেখেন, মানুষ নানাবিধ ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারে লিপ্ত। এক শ্রেণির মানুষ মাজারে গিয়ে মানত করছে, সেজদা করছে, পিরের মুরিদ হয়ে পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত আছে। এহেন অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড তাকে মর্মাহত করে । তিনি ঐ সকল বিপথগামী মুসলমানদের ইসলামের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য আত্মনিয়োগ করেন। এর ফলে। মানুষের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে।
চাকলা রোশনাবাদ পরগনার রাজা মানিক্য বাহাদুর শাসন পরিচালনায় নানাবিধ অসুবিধায় সম্মুখীন হন। সমতলে সাধারণ বাঙালি, কৃষক প্রজা, পাহাড়ে ত্রিপুরাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র উপজাতি প্রজার বসবাস। একদিকে হিন্দু, মুসলিম ও পাহাড়িদের ধর্মীয় বিরোধ, অন্যদিকে স্বাধীনতাকামী প্রজার জমিদারি প্রথা বিরোধী হিংসাত্মক আন্দোলন, তাকে ব্যতিব্যস্ত করে ফেলে। জমিদার বিরোধী আন্দোলন প্রশমনের জন্য তিনি কৌশলে প্রজাদের ধর্মীয় বিরোধে প্রণোদনা দেন। এতে ধর্মীয় বিদ্বেষ প্রকট হলে, তিনি পরগণাকে দুইভাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। একদল মানুষ তার পরগনা বিভক্তিকে সমর্থন করলেও আরেক দল এর তীব্র প্রতিবাদ করে। পরিশেষে তিনি পরগনা ভাগের সিদ্ধান্ত বাতিল করেন।
পাহাড়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদটি দক্ষিণ অঞ্চলের অধিকারে ছিল। এর ফলে উন্নয়নমূলক কাজ উত্তরাখাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে বেশি হয়েছে। স্কুল, ডাকঘর, কমিউনিটি সেন্টার, খেলার মাঠ, রাস্তাঘাট, বাজার দক্ষিণভাগেই স্থাপিত হয়। এলাকার লোকজনকে যে কোনো প্রয়োজনে দক্ষিণাঞ্চলের ওপর নির্ভর করতে হয়। এতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ প্রভাবশালী ও স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে। তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি ও স্বেচ্ছাচারিতায় উত্তরাঞ্চলের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। তারা বুঝতে পারল চেয়ারম্যান পদ উত্তরাঞ্চলের দখলে না আসা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের অত্যাচার হতে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উত্তরের সকলে জোটবদ্ধ হয়ে উত্তরের প্রার্থীকে ভোট দিল। ফলে উত্তরের প্রার্থী বিপুল ভোটে নির্বাচিত হলো। কিন্তু নানা কৌশলে দক্ষিণের লোকজন নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে তার পদে বসতে বাধা দিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবিসংবাদিত নেতা প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন দাস প্রথা বিলোপ এবং গণতন্ত্রের নবজাগরণের উদ্দেশ্যে গ্যাটিসবার্গ নামক স্থানে এক যুগান্তকারী ভাষণ প্রদান করেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে 'গ্যাটিসবার্গ এড্রেস' নামে খ্যাত। তার এ ভাষণের ব্যাপ্তি ছিল মাত্র তিন মিনিট। ভাষণে তিনি গণতন্ত্র, শোষিত মানুষের মুক্তি ও অধিকারের কথা বলেছেন। পৃথিবীতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং দাস প্রথা বিলোপে এটি একটি মাইলফলক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৈরতলা রেল ব্রিজের পাশে একটি গণকবর আছে। এটি সম্পর্কে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়তেই বের হয়ে আসল মানুষের হাড়-গোর আর পঁচা লাশ। পাশাপাশি দুইটা বিশাল গর্ত। আনুমানিক তিন চারশ মানুষের মরদেহ এখানে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। এগুলো স্বাধীনতা সংগ্রামী ও নিরপরাধ মানুষের সমাধি। হানাদার বাহিনী এবং রাজাকার আল বদরদের হাতে তারা শহিদ হয়েছেন।
কাজী পরিবারের গৃহভৃত্য মারুফ অত্যন্ত মেধাবী ও সাহসী ছিলেন। কাজী সাহেবের মৃত্যুর পর তাঁর সন্তানেরা মানুষকে জনৈক দাস ব্যবসায়ীর নিকট বিক্রয় করেন। পশ্চিমাঞ্চলের অধিপতি দাস ব্যবসায়ীর নিকট হতে মারুফকে ক্রয় করেন এবং তাঁর মেধা ও সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে সেনাপতি নিযুক্ত করেন । ইতোমধ্যে মারুফ পার্শ্ববর্তী পূর্বাশাল রাজ্য জয় করেন। আকস্মিকভাবে পশ্চিমাঞ্চল অধিপতির মৃত্যু হলে পরবর্তী শাসক মারুফকে দাসমুক্ত করে এবং বিজিত পূর্বাদলের স্বাধীন শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দেন। সামান্য অবস্থা থেকে নিজ দক্ষতা, মেধা ও বুদ্ধিমত্তায় গৃহভৃত্য মারুফ পূর্বাঞ্চলে স্বাধীন শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন।
শ্রীমাভো বন্দরনায়েক আধুনিক বিশ্বের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দেশ-বিদেশের কতিপয় অভিজাত শ্রেণির সমালোচনার মুখোমুখী হন। সমালোচকগুণ নারী বলে শ্রীমাভো বন্দরনায়েককে শাসনকার্যে অনুপযোগী, অদক্ষ বলে অভিহিত করেন। কিন্তু নিজ মেধাগুণে, তেজস্বিতা আর কর্মদক্ষতায় শ্রীমাভো দেশের সকল বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতি প্রতিহত করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের উন্নতি করেন।
স্বনামধন্য 'সেন্ট্রাল গার্মেন্টস চেয়ারম্যানের আকস্মিক মৃত্যুর পর তাঁর শ্বশুর মি. মাহিন চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। দায়িত্ব গ্রহণ করেই তিনি নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হন। সমস্যা মোকাবিলার জন্য তিনি 'কঠোরনীতি' গ্রহণ করেন। অবাধ্য ও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের তিনি বরখাস্ত করেন এবং চেয়ারম্যানের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য নিজ অফিস কক্ষটি জমকালোভাবে সজ্জিত করেন। প্রশাসনিক শক্তি সম্পর্কে কর্মচারীদের মনে ভীতি সঞ্চার করতে চেয়ারম্যানের কক্ষে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করেন। তিনি অফিসে সার্বক্ষণিক নজরদারিরও ব্যবস্থা করেন। ফলে সর্বক্ষেত্রে তাঁর কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়ে 'সেন্ট্রাল গার্মেন্টস' পুনরায় লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
প্রাথমিক জীবনে তৈমুর লং সিস্তান অভিযানকালে নির্বিঘ্নে রাজধানীতে প্রবেশ করেন। সিস্তান অধিপতি রাজধানী হেডে অন্যত্র আশ্রয় নেন। তৈমুর যখন নিশ্চিন্তে রাজধানীতে বিশ্রামরত তখন সিন্তানের সৈন্যরা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। এরপ অতর্কিত আক্রমণে তৈমুর লং পরাজিত হন এবং কোনোমতে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে যান। এমনকি কিছুকালের জন্য তিনি রাজ্যহারা হন।
মি. কাইমউদ্দীন নূরগঞ্জ এলাকার জমিদার ছিলেন। তাঁর স্ত্রী জুলেখা বেগম যেমন অপরূপা সুন্দরী তেমনি ছিলেন বুদ্ধিমতী ও সুনিপুণা। অল্প সময়ের মধ্যেই জুলেখা বেগম জমিদার মি. কাইমউদ্দীনের প্রিয়পাত্রী হয়ে ওঠেন। ফলে আরামপ্রিয় জমিদারের ওপর তার স্ত্রী প্রভাব বিস্তার করে এবং পর্দার আড়ালে প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারিণী হন।
ফরহান চৌধুরী একজন সমাজপতি। তিনি তার এলাকায় একটি সাহিত্য সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। নানা জায়গা থেকে তার সমিতিটিতে জ্ঞানী-গুণীজন আসতে থাকেন। তাদের নাতিদীর্ঘ আলোচনায় এলাকার বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কুসংস্কার দূর হতে থাকে। নানা সমস্যার সমাধান হয়। এছাড়া শিক্ষা-সাহিত্যের ক্ষেত্রেও সমিতি কার্যকর ভূমিকা রাখতে থাকে। এর কল্যাণে পশ্চাৎপদ এলাকাটি ধীরে ধীরে সংস্কৃতিবান হয়ে ওঠে।
খনিজ সম্পদে ভরপুর আফ্রিকার একটি দেশ সুদান। এদেশের উত্তরাঞ্চলের আয়তন দক্ষিণাঞ্চলের চেয়ে অনেক বড় হলেও জনসংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এছাড়া উত্তরাঞ্চলে নদী-নালা কম থাকার কারণে এখানকার ভূমি ছিল অনুর্বর এবং কোথাও কোথাও মরুময়। অন্যদিকে নদীবিধৌত দক্ষিণ সুদান ছিল উর্বর এবং খনিজ সম্পদগুলোও এ অঞ্চলে অবস্থিত ছিল। রাষ্ট্র ক্ষমতায় উত্তর সুদানের একচ্ছত্র আধিপত্য থাকায় দক্ষিণ সুদানকে অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত করে উত্তর সুদান সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। এ অবস্থায় দক্ষিণ সুদান সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতার ডাক দিলে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় গণভোটের মাধ্যমে দক্ষিণ সুদান স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
ইরাকি প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরাকি জনমতকে অগ্রাহ্য করে ইরাক দখলের পরিকল্পনা করে। প্রেসিডেন্ট বুশের নির্দেশে রাতের অন্ধকারে মার্কিন বাহিনী বাগদাদের নিরীহ জনগণের ওপর নির্বিচারে বোমা বর্ষণ করে এবং গণহত্যা চালায়। আমেরিকানরা এই অপারেশনের নাম দেয় 'অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম'। দীর্ঘদিনের যুদ্ধে ইরাক আজ বিধ্বস্ত ও বিপর্যস্ত। সাদ্দাম হোসেন পরবর্তী সরকারগুলো মূলত পরাধীন এবং বৃহৎশক্তির আজ্ঞাবহ মাত্র । জাতি হিসেবে ইরাক আজ নেতৃত্বহীন ও গভীর সংকটে পতিত এক জনপদ।
রমেশ যে দেশে বসবাস করত, সে দেশটি সামাজিক ক্ষেত্রে নানা বর্ণে ও শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অনৈক্য ছিল। এ পরিস্থিতির সুযোগে পার্শ্ববর্তী রাজ্যের আরো প্রকট। এ সাম্রাজ্যবাদী শাসক তার একজন তরুণ সেনাপতির নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে দেশটি করায়ত্ত করেন। কিন্তু সেখানে বিজয়ী শক্তির দীর্ঘস্থায়ী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা সম্ভব হয়নি। তবে এ বিজয়ের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ফলাফল ছিল গভীর ও সুদূরপ্রসারী।
মি. আলেজ উত্তরাধিকারসূত্রে এক বিশাল সম্রাজ্যের অধিপতি হন। ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি লক্ষ করলেন অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রর আক্রমণে সাম্রাজ্যের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন তিনি নিজেকে "ঈশ্বরের প্রতিনিধি" বলে ঘোষণা করেন। সেনাবাহিনী পুনর্গঠন করেন। রাজতন্ত্রের মর্যাদা রক্ষার জন্য কঠোর নীতি অবলম্বন করেন। তাঁর এ পদক্ষেপ সাম্রাজ্যের সংহতির জন্য সহায়ক হয়। তিনি দীর্ঘদিন দাপটের সাথে শাসনকার্য পরিচালনায় সক্ষম হন।
জনাব আলিম এক সংকটাপন্ন অবস্থায় অনিচ্ছা সত্ত্বেও দেশের শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করেন । তিনি কর আদায়ে উদারতা ও যুদ্ধ অপেক্ষা শান্তিতে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি কর্মসংস্থান এবং কন্যাদায়গ্রস্ত পিতাদের প্রতি সহায়তাদানসহ বহু জনহিতকর কাজ সম্পাদন করেন। এতে রাজকোষের ঘাটতি দেখা দিলেও একজন প্রজাহিতৈষী শাসক হিসেবে তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ভাগ্য বিড়ম্বিত যুবক ইরফান পৈতৃকসূত্রে প্রাপ্ত একটি ক্ষুদ্র অঞ্চলের অধিপতি ছিলেন। কিন্তু নিকট আত্মীয়নের ষড়যন্ত্রের কারণে ঐ রাজ্য হাতছাড়া হয়ে যায়। এ অবস্থায় তিনি অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পার্শ্ববর্তী রাজ্য আক্রমণ করেন। উন্নত রণনীতি ও সমরাস্ত্রের সাহায্যে প্রতিবেশীর বিশাল সৈন্যবাহিনীকে যুদ্ধে পরাজিত করেন। অতঃপর ঐ রাজ্যের ধ্বংসস্তূপের ওপার একটি নতুন সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করার গৌরব অর্জন করেন।
বিমাতার দূরভিসন্ধির ফলে পিতৃরাজ্য হারিয়ে হাদীদ ভাগ্যান্বেষণে বের হন। অনেক বন্ধুর পথ পেরিয়ে এক পর্যায়ে একটি প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্যের শাসককে ক্ষমতাচ্যুত করে ঐ সাম্রাজ্যের অধিপতি হন। মাত্র কয়েক বছরের রাজত্বকালে তিনি রাজস্ব ব্যবস্থায় ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন সাধন করেন। তাঁর এসব কর্মকাণ্ড পরবর্তী শাসকদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে
ইনসান আলি বাল্যকাল থেকে সাহসী, মেধাবী ও ধর্মপরায়ণ ছিলেন। পরাধীন দেশে স্বজাতির নানা অসংগতি দেখে তিনি ব্যথিত হন। বিদেশি শাসকগোষ্ঠীর শোষণে ও অত্যাচারের তিনি প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে তিনি বিদেশি শক্তির বিনাশে সশস্ত্র সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন। তিনি স্বদেশকে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্তির লক্ষ্যে দলবলসহ জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে লড়াই চালিয়ে যান। তাঁর এ সংগ্রাম ব্যার্থ হলেও পরবর্তী প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্দীপ্ত করে।
দেশটি দীর্ঘ ঔপনিবেশিক শাসনে নিপতিত হয়। উক্ত শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য দেশের বিভিন্ন অপালে বহু আন্দোলন সংঘটিত হয়। এক পর্যায়ে একই সময়ে সারাদেশব্যাপী ব্যাপক গণঅসন্তোষ দেখা দেয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিচক্ষণতার অভাবে ও ঔপনিবেশিক শক্তির উন্নত অস্ত্র বলে এ আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করা হয়। উক্ত গণ-অসন্তোষ ব্যর্থ হলেও ঔপনিবেশিক শক্তির ক্ষমতার ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। দেশের মানুষ রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয়ে ওঠে। নতুন রাজনৈতিক শক্তির উন্মেষ ঘটে, যা ঔপনিবেশিক শাসন থেকে জনগণের মুক্তির পথ প্রশস্ত করে।
দেশটি বহু বর্ণে, ধর্মে ও জাতিতে বিভক্ত ছিল। ফলে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পক্ষে ঐ দেশে শাসন-শোষণ খুবই সহজ ছিল। এক পর্যায়ে দেশের মানুষ ক্রমেই স্বাধীনতার জন্য উন্মুখ হয়ে পড়ে। একটি রাজনৈতিক দলের নেতা ধর্মের ওপর ভিত্তি করে এক ঐতিহাসিক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। প্রস্তাবটি পরবর্তীতে কিছুটা সংশোধিত হয়ে প্রকাশিত হওয়ার পর সারা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। শেষ পর্যন্ত উত্ত প্রস্তাবের ভিত্তিতে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি বিদায় নেয়। দেশটি বিভক্ত হয়ে একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্রে আত্মপ্রকাশ করে।
এশিয়া মহাদেশের দেশটি উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞল এ দু' অংশে বিভক্ত ছিল। উত্তরাঞ্চল ছিল প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু নেতৃত্বে ও কর্তৃত্বে এ অঞ্চলের প্রাধান্য ছিল। দক্ষিণাঞ্চল প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় শাসকগোষ্ঠীর অবহেলায় উন্নয়ন বঞ্চিত থেকে যায়। ফলে উভয় অংশে আঞ্চলিক বৈষম্য প্রকট হয়। এরূপ পরিস্থিতিতে দক্ষিণাঞ্চলে বেঞ্জামিন নামে এক জননেতার উত্থান হয়। তিনি আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসনের জন্য ১০ দফা কর্মসূচিভিত্তিক আন্দোলনের ডাক দেন। তাঁর এ আন্দোলনে দক্ষিণপাগলের জনগণ ব্যাপক সমর্থন জানায়। শেষ পর্যानন ভ্যান থেকে সশস্ত্র স্বাধীন গ্রামের রূপ পরিগ্রহ করে।
১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দের ১৯ নভেম্বর। গেটিসবার্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম পিংকন দান প্রথা বিলোপ, নাগরিক অধিকার ও গণতন্ত্র প্রসঙ্গে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। তাঁর এ ভাষণের দারিত্বকাল ছিল মাত্র তিন মিনিট। 'গেটিসবার্গ এড্রেস' নামে খ্যাত এ ভাষণ দুনিয়ার ইতিহাসে গণতন্ত্রের মহাজাগরণে এক অনন্য দলিল।
যুগোশ্লাভিয়ার বসনিয়া-হার্জেগোভিনা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল। সংখ্যালঘিষ্ঠ সার্ব শাসকগোষ্ঠীর নিকট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই শোষিত ও নিষ্পেষিত হয়ে আসছিল বসনীয় জনগোষ্ঠী। ফলে দীর্ঘদিনের বঞ্চনা তাদের বিক্ষুব্ধ করে তোলে এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার ডাক দেয়। সার্ব-ক্রোট যৌথশক্তি এ আন্দোলন দমনে গণহত্যা, লুণ্ঠন, নারী ও শিশুদের প্রতি পাশবিক নির্যাতন চালায়। অবশেষে লক্ষ লোকের আত্মদান ও অসংখ্য নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে বসনিয়া স্বাধীনতা অর্জন করে।
অটোমান সুলতান অরখান জেনিসারি বাহিনী গঠন করে বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান পরিচালনা করে অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠন করে। নিজ এলাকার উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেন। সম্প্রতি একটি দ্বীপের সুসজ্জিত ও সুরক্ষিত উপাসনালয়ের মূল্যবান অর্থ- সম্পদের সন্ধান পেয়ে অরখান সেটি আক্রমণ ও লুণ্ঠন করেন। স্থানীয় অধিবাসীরা প্রাণপণ চেষ্টা করেও উপাসনালয়টিকে লুণ্ঠনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেননি।
প্রশাসনে অভিজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত কমকর্তা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়ে দেখলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যে আমলা শ্রেণি তৈরি করা হয়েছিল তারাই এখন প্রশাসন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। তারা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে অশোভন আচরণ ও বিশৃঙ্খলা তৈরি সিন্ডিকেটভিত্তিক অফিসিয়াল কার্যাদি পরিচালনা করত। এমতাবস্থায় মেয়র প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সিন্ডিকেটদের কঠোরভাবে দমন-বদলি, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ কিছু অত্যাবশ্যকীয় বিধি-নিষেধ আরোপ করেন। ফলে সিটি কর্পোরেশনের সুশাসন ও সুনাম পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় ।
জমিদার আবুল হাসান মৃত্যুর পূর্বে তার বিদূষী ও বুদ্ধিমতী কন্যা হাসনা বানুকে তার বিশাল জমিদারির উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। আপনজনদের নানামুখী বিরোধিতার সম্মুখীন হয়ে তাকে জমিদারি হারাতে হয়েছিল। কিন্তু শত্রুদের হাতে তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর পুনরায় তিনি জমিদারি ফিরে পান। সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নারীসুলভ দুর্বলতার কারণে তিনি নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে কাঙ্ক্ষিত সফলতার পরিচয় দিতে পারেননি।
সরাইল উপজেলার চেয়ারম্যান পদে সামাদ পরিবার ঐতিহ্যগতভাবে নির্বাচিত হয়ে আসছে। কদম আলী পরিবার ভাগ্যান্বেষণে সরাইলে এসে বসতি স্থাপন করে। কদম আলীর সহজ-সরল জীবনযাপন, সাহসিকতা, নীতি নৈতিকতা, সত্যবাদিতা, বিচক্ষণতা ও চারিত্রিক মাধুর্য উপজেলাবাসীর নজর কাড়তে সক্ষম হয়। সরাইল উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচনে কদম আলী বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। তিনি উপজেলার অভাবনীয় উন্নয়ন করেন। উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা, সুশাসন, জননিরাপত্তা, বিচার ও সালিশ ব্যবস্থার উন্নয়ন, রাস্তাঘাট নির্মাণ, রাজস্ব আদায়সহ সকল ক্ষেত্রে অসামান্য উন্নয়ন করেন, যা ইতোপূর্বে অন্য কোনো চেয়ারম্যানই করতে পারেননি। কিন্তু তার মৃত্যুর পর আবার উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটি সামাদ পরিবারের হাতে চলে যায়।
সর্বধর্ম মতবাদের প্রবক্তা শ্রী আনন্দ স্বামী। তিনি অষ্টাদশ শতাব্দীতে ত্রিপুরা জেলার সরাইল পরগনার কালিকচ্ছ গ্রামে এক কৌলিন জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জমিদারের দায়িত্ব পালনকালে প্রজাদের ধর্মভিত্তিক বিভাজন ও আন্তঃধর্মবিবাদ তাঁকে চিন্তামগ্ন করে তোলে। ধর্ম নিয়ে হত্যা, হানাহানি, রক্তপাত নিরসন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ইসলাম, সনাতন ও খ্রিস্টধর্মের সমন্বয়ে সর্বধর্ম মতবাদ প্রবর্তন করতে সক্রিয় হন। তার এ সর্বধর্ম মতবাদে প্রকৃত মানবতার আহ্বান থাকলেও ধর্মভীর মানুষের দৃষ্টি তিনি আকর্ষণ করতে পারেননি। তবে এর মাধ্যমে তিনি সকল শ্রেণির মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছিলেন।
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে জার্মানির পশ্চিমাঞলের জনগণের চেয়ে পূর্বাঞ্চলের জনগণ অনুন্নত ও অবহেলিত ছিল । পশ্চিমাঞ্চলের শাসকগোষ্ঠীর বৈরী মনোভাব আর পূর্বাঞ্চলের জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নের উদ্দেশ্যে পূর্ব জার্মানি ও পশ্চিম জার্মানি নামে দুটি পৃথক রাষ্ট্র জন্ম লাভ করে। এ বিভক্তির ফলে উভয় দেশের জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। জনগণের একটি অংশ এ বিভক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। অবশেষে প্রবল আন্দোলনের মুখে দুই জার্মানিকে পুনরায় একত্রীকরণ করা হয়।
রফিক ও শফিক দুই ভাই। বাবার মৃত্যুর পর তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইস্টার্ন গার্মেন্টসের মালিকানা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে, বড় ভাই রফিক গার্মেন্টস পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবেন এবং ছোট ভাই শফিক সংসার দেখাশোনা করবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বড় ভাই গার্মেন্টস পরিচালনা এবং ছোট ভাই সংসার দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিন্তু গার্মেন্টসের আয় থেকে ছোট ভাইকে সংসার পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান না করায় উভয়ের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বের কারণে বাবার প্রতিষ্ঠিত গার্মেন্টসটি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
আলভী গার্মেন্টসের কর্ণধার কাদের চৌধুরী তার অধীন কর্মচারীদের নিয়োগবিধি মোতাবেক প্রাপ্য মজুরি, বোনাস, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ ইত্যাদি সুবিধা প্রদানে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত করে আসছিল। এতে বিক্ষুদ্ধ কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে দাবি আদায়ে শ্রমিক সংঘ গড়ে তোলে এবং বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে। আন্দোলনের চাপে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের দাবি মেনে নেয়া হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন অজুহাত ও কৌশলে মালিক তাদের ঐক্য ভেঙেও দেয় এবং কঠোর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব স্থাপন করে।
সীমাহীন বৈষম্য, অত্যাচার ও নিপীড়নের কারণে ভিয়েতনামের দুই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বিশাল অসমতা তৈরি হয়। এর ফলে গত শতাব্দীর মাঝামাঝিতে ভিয়েতনামের দুই অংশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের এক পর্যায়ে দক্ষিণ ভিয়েতনামের একজন সামরিক কর্মকর্তার নির্দেশে উত্তর ভিয়েতনামের একটি অংশে মানবতাবিরোধী ঘৃণ্য ও বর্বর হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। এতে বহু নিরাপরাধ ও নিরস্ত্র নারী-পুরুষ এবং শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডটি তাদেরকে বিশ্ববাসীর ঘৃণার পাত্রে পরিণত করে। অবশেষে একটি চুক্তির মাধ্যমে এ যুদ্ধের অবসান হয়।
নদীভাঙনের শিকার হয়ে একদল মানুষ ঘরবাড়ি, ফসলি জমি হারিয়ে নাখালপাড়ার বস্তিতে আশ্রয় নেয়। বাজারের মাল উঠানামা, হোটেল কর্মচারী, পত্রিকা বিক্রি, ফুলবিক্রি, রিকশা-ভ্যান চালানো ইত্যাদি কাজ করে তারা অতি কষ্টে দিনযাপন করছিলো। একদিন হঠাৎ উৎখাত হয়ে তারা শ্যামলির বস্তিতে আশ্রয় নেয়। শুরু হয় নতুন সংগ্রাম। এভাবে আতংক ও অনিশ্চয়তায় তাদের দিন কাটে।
ইরানের রেজা শাহ পাহলভী ইরানকে একটি আধুনিক সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য জ্ঞান ও প্রযুক্তির উপর জোর দেন। তিনি কৃষিক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রযুক্তি যেমন জমি চাষের জন্য ট্রাকটর আমদানি করেন। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাঁধ দেন, খাল খনন করেন, সার ও কীটনাশকের ব্যবহার করেন। তিনি নাগরিক জীবনকে নিরাপদ করা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করেন এবং প্রয়োজনে নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করেন ।
ফাহিম তার সমমনা বন্ধুদের নিয়ে ‘অন্বেষা সংঘ' গড়ে তোলে। এই সংঘ যুবকদের নানামুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের সাবলম্বী করে তোলে। ইভটিজিং, মাদক সেবন প্রতিরোধ করা, রাস্তা মেরামত, জলাশয় পরিষ্কার, পথশিশুদের খাবার ও পাঠদান, বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠা করে সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা আনয়ন তাদের লক্ষ্য। অনিষ্টকারীদের দমন ও নিপীড়িতদের সাহায্য দানই ছিল তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা-নরসিংদী মহাসড়কে বড় বড় গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছিল। ভারী কিছু লোহার পিলারও ফেলে রাখা হয়েছিল। যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে সাময়িক কষ্ট হলেও অপশক্তির সরাসরি হামলা হতে একটি বৃহত্তর জনপদকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময়ে একদল লোক স্বাধীনতার বিরোধিতা করে মূল জনগোষ্ঠী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। এরা রাজাকার নামে পরিচিত।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের ধর্মীয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক অধিকার রক্ষা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার উদ্দেশ্যে জনমত ও আকাঙ্ক্ষার প্রতি লক্ষ্য রেখে একটি সংবিধান রচিত হয়। এতে নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও দায়িত্ব-কর্তব্য সংরক্ষিত হয়। এই সংবিধান অনুসারেই রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছে।
ধর্মীয় আবেগকে পুঁজি করে মানুষকে শোষণ করা, মানুষের শক্তিকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করার আকাঙ্ক্ষা থেকে ধর্মীয় বিভিন্ন দল ও মতের জন্ম হয়। অনেক ব্যক্তি ভণ্ডামীর আশ্রয় নিয়ে নিজেকে ঐশ্বরিক ক্ষমতার অধিকারী বলে দাবি করে। মানুষ তাদের অন্ধভাবে বিশ্বাস করে তাদের ভক্তি করে এবং অনুসরণ করে। মানুষ নিজের আয়-উপার্জন থেকে সরকারকে কর দেওয়ার বিষয়ে সব সময়েই অনিহা প্রকাশ করে । ইতিহাসে কর না দেওয়ার দাবিতে অনেক বিদ্রোহের পরিচয় পাওয়া যায় ।
আরশাদ মিয়া একটি সিরামিক ইন্ডাস্ট্রির কর্ণধার। তার বিরুদ্ধে দুটি মারাত্মক অভিযোগ তোলা হয়। তিনি তার আপনজনদেরকে প্রতিষ্ঠানের আয়ের একটি বিরাট অংশ অন্যায়ভাবে দান করেছেন। আরও অভিযোগ উঠে যে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে একতরফাভাবে নিজ আত্মীয়স্বজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। ফলে অনেক যোগ্য লোক চাকরি পায়নি। অনেককে আবার জোড়পূর্বক চাকুরিচ্যুত করা হয়।
রাজা প্রথম জর্জ ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডে রাজতন্ত্রের সূচনা করেন। ক্ষমতা গ্রহণের পরই তিনি রাজতন্ত্রের সুদৃঢ়করণের স্বার্থে সংস্কারমূলক কার্যক্রমে হাত দেন। তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রশাসনকে ঢেলে সাজান। এছাড়া স্কটল্যান্ড, উস্টারশায়ার, ম্যানচেস্টার প্রভৃতি কান্ট্রিতে নিজ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করেন। ক্ষেত্রবিশেষে উদারতা ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দেখালেও একজন দূরদর্শী ও বিচক্ষণ কূটনীতিক হিসেবে তিনি রাজতন্ত্রের জাঁকজমকতা ও আড়ম্বরতায় বিশ্বাসী ছিলেন ।
ইলখানী সুলতান গাজান খান একজন প্রজারঞ্জক শাসক ছিলেন। তিনি জনগণের কল্যাণের কথা চিন্তা করে সকল প্রকার অন্যায় কর নিষিদ্ধ করেন। তার শাসননীতি ছিল প্রজাকল্যাণ ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা। তিনি অত্যন্ত ন্যায়বান সুচরিত্রের অধিকারী, পরিশ্রমি শাসক ছিলেন সত্য, তবে সাম্রাজ্যের বিভিন্ন মতাবলম্বিদের বিরোধীতা, বহুজাতির সমন্বয়ে গঠিত রাষ্ট্রের দুর্বলতা, ইলখানীদের প্রতি বিরূপ মনোভাব ইত্যাদি কারণে ইলখানী সাম্রাজ্যটি খুব স্থায়ী হয়নি।
চেঙ্গিস খান অত্যন্ত সন্দেহপ্রবণ নিষ্ঠুর ব্যক্তি ছিলেন। ইতিহাসে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, তিনি অনেক সময় অমূলক সন্দেহের বশবর্তী হয়েও তার অনেক কাছের বিশ্বস্ত মানুষকে হত্যা করেছেন ৷ রাজবংশ ও সাম্রাজ্য দুর্বল হয়েছে। চেঙ্গিস খানের উত্তর পুরুষ কুবলাই খান সাম্রাজ্য শাসনের সুবিধার পাশাপাশি রাজধানীর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে রাজধানী কারাকোরাম থেকে পিকিং স্থানান্তর করেন এবং নতুন রাজধানীকে বিভিন্নভাবে সজ্জিত করেন।
ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার জ্ঞানপিপাসু ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘আলোকিত সাহিত্য পরিষদ গঠিত হয়। দেশী-বিদেশী প্রচুর গ্রন্থের সমাবেশ রয়েছে এখানে। এখানে গ্রন্থাবলি সংরক্ষণ, অনুবাদ ও গবেষণার উদ্যোগ নেয়া হয়। এই প্রতিষ্ঠান ভালো লেখক ও নতুন গবেষকদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ, আর্থিক অনুদান ও পুরস্কারের ব্যবস্থা করে থাকে ।
কৃষ্ণ সাগরে বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল করে। রাশিয়ার পণ্যবাহী জাহাজের মালামাল ও নাবিকরা অপহৃত হলে প্রতিবেশি দেশ ইউক্রেনকে দায়ী করে ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়। ইউক্রেন ক্ষতিপূরণে অস্বীকৃতি জানালে উক্ত ঘটনা ও অন্যান্য স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দুপক্ষের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ফলে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করে।
হমদ শাহ ১৭৪৮ খ্রিষ্টাব্দে সিরহিন্দ আক্রমণ করেন। কিন্তু সিরহিন্দের শাসক মইন উল-মূলক মানপুরের প্রথম যুদ্ধে তাকে পরাজিত করেন। আহমদ শাহ ১৭৪৯ খ্রিষ্টাব্দে শক্তিশালী বাহিনী নিয়ে ২য় যুদ্ধে সিরহিন্দের শাসনকর্তাকে পরাজিত করেন। আহমদ শাহ বিজয়ী অঞ্চলে তার সেনাপতিকে দায়িত্ব প্রদান করে রাজধানীতে প্রত্যাবর্তন করেন।
একটি ছোট রাজ্যের রাজার মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে ফাহমিদ সিংহাসনে বসেন। ফাহমিদ অল্প বয়সী ও অনভিজ্ঞ হওয়ার কারণে নিকট আত্মীয় ও আমীর ওমরাহদের ষড়যন্ত্রে পিতার রাজ্য থেকে বিতাড়িত হন। ফাহমিদ বিচলিত না হয়ে নতুন উদ্যমে আত্মপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত করে। ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য একটি নতুন সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
তাহমিদ বিমাতার অত্যাচারে পিতৃগৃহ ত্যাগ করে এক সামন্তরাজার অধীনে চাকুরী গ্রহণ করেন। অল্প দিনে রাজার প্রিয়পাত্র হয়ে রাজকীয় ও কূটনৈতিক গুণাবলি অর্জন করেন। অর্জিত কূটনৈতিক জ্ঞান ও উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে একটি বিশাল এলাকার অধিপতি হয়ে যোগাযোগ ও ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন করেন।
বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশদের উপনিবেশ ছিলো। আঠারো শতকের ব্রিটিশ উপনিবেশিক শোষণের বিরুদ্ধে আমেরিকানরা স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলনে খাদ্য ও রশদ দিয়ে সহায়তা করে ব্রিটিশদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ফ্রান্স। ফরাসিদের সহায়তায় ১৭৭৬ সালে আমেরিকা স্বাধীনতা লাভ করে। ঘটনাটি বিশ্ব ইতিহাসের যুগান্তকারী অধ্যায়।
২০২০ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসের মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচনে অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রিসি (এনএলডি) একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু সে দেশের ক্ষমতাশীন জান্তা সরকার নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বাতিল করে। জনরায়ের প্রতি সম্মান না দেখিয়ে এনএলডি প্রধানকে গ্রেফতার করে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত করে। সামরিক জান্তা সরকারের প্রতিক্রিয়াশীল নীতির কারণে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করে।
মুসলিম স্পেনের বিখ্যাত শাসক ৩য় আব্দুর রহমান স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম পৃষ্ঠ পোষক ছিলেন। রাজধানী কর্ডোভাকে রূপকথায় নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ১০০ প্রাসাদ, ৩০০ মসজিদ, ৩৮০ টি হাম্মাম খানা নির্মাণ করেন। রাজধানী শহরের তিন মাইল অদূরে নিজ স্ত্রীর ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ আজ-জোহরা প্রাসাদ নির্মাণ করে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
মায়ানমারের জান্তা সরকার রোহিঙ্গাদের শত বছরের সংস্কৃতিকে অস্বীকার করে জাতিগতভাবে উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা করছে। রোহিঙ্গারা মাতৃভাষা ও বর্ণমালা ব্যবহার করে যাতে শিক্ষা গ্রহণ ও মনের ভাব প্রকাশ করতে না পারে সে জন্য রাষ্ট্র এ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্যকে যেনো বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে না পারে তাই তাদের জোড়পূর্বক নিজভূমি থেকে উচ্ছেদ করে বিশ্বের সবচেয়ে নিগৃহীত জাতিতে পরিণত করেছে।
১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রান্সের রাজা ষোড়শ লুইয়ের স্বৈরাচারী শাসন, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ও বৈষম্যের প্রতিবাদে ফরাসি বিপ্লব সংঘটিত হয়। স্বাধীনতা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব এ স্লোগানের তিনটি দাবিই হয়ে উঠেছিল ফরাসিদের প্রাণের দাবি। ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে গণমানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সফল হয় এবং জনগণ মুক্তি পায় ।